কাউনিয়াতে পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা, মাঠ জুড়ে সবুজের সমারোহ
কাউনিয়া(রংপুর)প্রতিনিধি:
এককালে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত সোনালি আঁশ পাটের গৌরবময় অতীত হারিয়ে গেলেও নতুন করে আবার পাটের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। চলতি মৌসূমে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। টানা ক’বছর ধরে পাটচাষিরা পাটের বাজার মূল্য ভাল পাওয়ায় পাট চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবানও হয়েছেন। ফলে ব্যাপক হারে এ বছর পাট চাষ করেছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকের মাঠে মাঠে দু-চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ। সবুজ পাতা দোল খাচ্ছে মাঠের পর মাঠ। সেই সাথে এখন দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। যেন মাঠ জুড়ে সবুজ রঙে সাজিয়ে তুলেছে প্রকৃতির অপরূপ শোভা। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় গত বছরের চেয়ে পাটের বাম্পার ফলনের আশা করছেন এবং এবারও ভালো দামের স্বপ্ন দেখছেন প্রান্তিক চাষিরা।
শহীদবাগ ইউনিয়নের বল্লভ বিষু গ্রামের পাট চাষি সাইফুল ইসলাম জানান, পাট অধিদপ্তরের সহযোগীতায় এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এ বছর পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। পাট চাষে খরচ কম, লাভ বেশি। আশা করছি এ বছরও পাটের ভালো দাম পাবো। একই ইউনিয়নের কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। তবে আশা করছি এবার পাটের ফলন ভালই হবে। একই ইউনিয়নের কৃষক ভুপাল চন্দ্র জানান, সরকারের দেওয়া সার, বীজ ও প্রশিক্ষণ নিয়ে পাট চাষ করেছি। পাটের বাম্পার ফলনও হয়েছে তবে আশা করছি পাটের ন্যায্য মুল্য পাব। উপজেলার সদর বালাপাড়া ইউনিয়নের উত্তর হরিশ^র গ্রামের পাট চাষি আব্দুল জব্বার জানান, এ বছর দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আক্ষেপ করে আরো জানান, পাটের ভরা মৌসূমে পাটের বাজার মুল্য কম থাকে। কিন্তু মধ্যস¦ত্তভোগীরা কম দামে কিনে মজুত করে পরবর্তীতে বেশি দামে বিক্রয় করায় ন্যায্যমূল্য থেকে বি ত হচ্ছে আমাদের মতো পাট চাষীরা।
উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মো.মনিরুজ্জামান জানান, কৃষকদের পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করতে প্রশিক্ষণ ও বিনা মূল্যে সার বীজ বিতরণসহ নানাবিধ সহযোগিতা প্রদান করায় চলতি মৌসূমে পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানাজ পারভীন জানান, এ বছর উপজেলায় কৃষি বিভাগ ১০১০হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হলেও মাঠ পর্যায়ে প্রায় ৮৯০হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছেন প্রান্তিক চাষিরা। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবছরও পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আশা করি কৃষকরা তাদের উৎপাদিত স্বপ্নের সোনালী ফসল ঘরে তুলতে পারবে। তিনি আরো বলেন পরিবেশবান্ধব পাটের মোড়কসহ বিভিন্ন কাজে পাট জাতীয় পণ্যের ব্যবহার বাড়ালে পাটের চাহিদা যেমন বাড়বে তেমনি লাভবান হবেন পাট চাষীরা।