জয়পুরহাটে কিডনি বিক্রির অভিযোগে স্বামী-স্ত্রী গ্রেপ্তার
বুধবার রাতে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার উলিপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার খাজা মইনুদ্দিন (৪০) ওই গ্রামের মৃত আবু সাইদের ছেলে এবং মোছা. নাজমা বেগম (৩০) মইনুদ্দিনের স্ত্রী।
কালাই থানার ওসি আব্দুল লতিফ খান বলেন, এক বছর পূর্বে খাজা মইনুদ্দিন তার স্ত্রী নাজমাকে কিডনি বিক্রি করতে প্রলুব্ধ করলে নাজমাও স্বেচ্ছায় তার একটি কিডনি বিক্রি করেন।
“কিডনি বিক্রি যে আইনত দণ্ডণীয় অপরাধ সে ব্যাপারে এর আগে থেকেই ওই এলাকায় বিভিন্নভাবে পুলিশ গণসচেতনতামূলক প্রচার চালায়।
মইনুদ্দিন ও নাজমা জেনেশুনে তাদের কিডনী বিক্রি করেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনের বিধি মোতাবেক অনুমতি ছাড়া কেউ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাউকে দিতে পারেন না এবং কোনো হাসপাতাল তা প্রতিস্থান করতেও পারে না।
মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে কী আছে?
এই আইনে বলা হয়েছে-‘সুস্থ ও স্বাভাবিক বুদ্ধিসম্পন্ন কোন জীবিত ব্যক্তি তাহার এমন কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, যাহা
বিযুক্তির কারণে তাহার স্বাভাবিক জীবন-যাপনে ব্যাঘাত সৃষ্টির আশংকা না থাকিলে উহা, তাহার কোন নিকট আত্মীয়ের দেহে সংযোজনের জন্য দান করিতে পারিবেন: তবে শর্ত থাকে যে, চক্ষু, চর্ম, টিস্যু ও অস্থিমজ্জা সংযোজন বা প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে
নিকট আত্মীয় হইবার প্রয়োজন হইবে না।’
আইনে নিকট আত্মীয় বলতে বাবা, মা, ছেলে, মেয়ে, ভাই, বোন, স্বামী, স্ত্রী ও রক্ত সম্পর্কিত আপন চাচা, ফুফু, মামা, খালা, নানা, নানি, দাদা, দাদি, নাতি, নাতনি, আপন চাচাত, মামাত, ফুপাত, খালাত ভাই বা বোনকে বোঝানো হয়েছে।
এ আইনের আওতার বাইরে কেই অঙ্গ-প্রতঙ্গ অন্য কাউকে দিলে তা দণ্ডণীয় অপরাধ। সাজার বিষয়ে আইনে বলা হয়েছে-
আত্মীয়তা সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দানে জড়িতদের দুই বছর পর্যন্ত সাজা অথবা পাঁচ লাখ টাকা দণ্ড হতে পারে। এ অপরাধ ছাড়া অন্য কোন বিধান লঙ্ঘনের দায়ে জড়িতদের তিন বছর সাজা অথবা ১০ লাখ টাকা দণ্ড হতে পারে।
এছাড়া এ আইনে কোনো চিকিৎসক দণ্ডিত হলে তার বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল তার নিবন্ধন বাতিল করতে পারে।
ওসি আব্দুল লতিফ জানান, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মইনুদ্দিন ও নাজমা কিডনি বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এ ঘটনার সত্যতা পেয়েছে পুলিশ।