পাবনায় থানায় বিয়ের ‘প্রমাণ’ পাওয়ায় ওসি প্রত্যাহার
জেলার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, “ওসি ওবাইদুল হক থানায় বিয়ের কথা অস্বীকার করলেও তদন্ত কমিটি থানার গোলঘরে বিয়ের বিষয়টির সত্যতা পেয়েছে। আর বিয়ের সামগ্রিক আয়োজনে থানার এসআই একরামুল হকের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে।”
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওসিকে পুলিশ লাইন্সে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
আর এসআইকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিভাগীয় তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআই একরামুল হকতিন সন্তানের জননী ওই নারীর অভিযোগ, প্রতিবেশী রাসেল আহমেদ গত ২৯ অগাস্ট তাকে তার বাড়িতে নিয়ে এক সহযোগীসহ পালা করে ধর্ষণ করে। দুদিন পর তাকে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিসে নিয়ে তিন দিন আটকে রাখা হয় এবং সেখানে আরও চার-পাঁচনজন তাকে পালা করে ধর্ষণ করে।
পরে ওই গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে পাবনা থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ রাসেলকে আটক করে। কিন্তু মামলা নথিভুক্ত না করে পুলিশ ওই রাতেই রাসেলের সঙ্গে তার বিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষ ওসি ওবাইদুল হককে কারণ দর্শাতে বলে। এছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরে থানায় মামলা নেওয়া হয়। ঘটনা তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করে পুলিশ।
এ ঘটনায় মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামির মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তারা হলেন রাসেল আহমেদ, হোসেন আলী, মো. সঞ্জু ও সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ঘন্টু (৩৮)।
পুলিশ সুপার বলেন, “আসামিদের মধ্যে রাসেল ও হোসেন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকোরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।”
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনও একটি কমিটি গঠন করেছে।
জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, ঘটনা অনুসন্ধানে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে তিন সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ নেওয়াজ। অন্য দুইজন হলেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবনে মিজান ও ডেপুটি সিভিল সার্জন কে এম আবু জাফর।
এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে ও ন্যায় বিচার দাবিতে জেলা শহরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জেলা মহিলা পরিষদ।