শনি. ডিসে. 14th, 2024

বনে আর ফেরা হল না রাঙ্গুনিয়ার হাতিটির

বন থেকে বেরিয়ে বারবার কাদায় আটকে পরে লোকালয়ে থেকে যাওয়া বন্য হাতিটি ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।

রাঙ্গুনিয়ার জামিলাবাদ নূরের ঘোনা থেকে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার সাফারি পার্কে নেওয়ার ১৬ দিনের মাথায় শনিবার ভোরে মারা যায় ১২ বছর বয়সী মাদি হাতিটি।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হাতিটির মরদেহের পোস্টমর্টেম করা হয়েছে। পরে সাফারি পার্কের হাতিরগোদা এলাকায় সেটিকে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।”

হাতিটির চিকিৎসায় ৫ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল গঠন করা হয়েছিল জানিয়ে রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “ডাক্তাররা বলেছেন, কাদায় আটকে থাকা অবস্থায় হাতির পেটে কাদামাটি ঢুকে গিয়েছিল। খুবই কম পরিমাণে খেতে পারছিল।

“বিশেষজ্ঞ দল অনেক চেষ্টা করেছে। আমি নিজেও কয়েকবার হাতিটিকে দেখতে গেছি। কিন্তু বাঁচানো গেল না।”

এপ্রিল মাসের শেষে লোকালয়ে এসে কাদায় আটকে পরে হাতিটি। এরপর গত ১৩ মে অসুস্থ হাতিটিকে রাঙ্গুনিয়ার জামিলাবাদ নূরের ঘোনা এলাকা থেকে সাফারি পার্কে নেওয়া হয়।

বন বিভাগের রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের ফরেস্টার মো. মাসুদ কবীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি, যাতে হাতিটিকে সুস্থ করে বনে ফিরিয়ে দেওয়া যায়। সুস্থ না হওয়ায় ভালো চিকিৎসার জন্য সাফারি পার্কে নেওয়া হল। সেখানকার ডাক্তাররাও অনেক চেষ্টা করলেন। কিন্তু বাঁচাতে পারলাম না। খুব খারাপ লাগছে।”

২৯ এপ্রিল রাতে উপজেলার কোদালা চা বাগান সংলগ্ন তৈলাভাঙা বিলে প্রথমবার কাদায় আটকা পরে বন্য হাতিটি। পরদিন উদ্ধারের পর ৪ মে আবার কোদালা চা বাগানের পূর্ব পাশে জামিলাবাদের একটি বিলে হাতিটি কাদায় আটকে যায়।

প্রথমবার কাদা থেকে উদ্ধার পেয়ে বনে ফিরেছিল হাতিটি। দ্বিতীয়বারও চিকিৎসা শেষে হাতিটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু হাতির পাল এসেও সেটিকে আর বনে ফেরাতে পারেনি।

রাঙ্গুনিয়ার কোদালা চা বাগান সংলগ্ন পাহাড়ি বনে হাতি পালের বসবাস। প্রথমবার তৈলাভাঙা বিলে কাদায় আটকানোর পর স্থানীয়দের বরাতে বন বিভাগে কর্মীরা জানিয়েছিলেন, হাতিটিকে আগেও একা একা চলাচল করতে দেখেছে এলাকাবাসী।

বারবার কাদায় আটকে পরা হাতিটিকে উদ্ধারে প্রতিবার স্থানীয়রা এগিয়ে এসেছেন। দ্বিতীয়বার কাদায় আটকে অসুস্থ হয়ে লোকালয়েই ছিল হাতিটি। স্থানীয়রা হাতিটিকে খাবার দিচ্ছিল। এর মধ্যে শেষ ২-৩দিন খেতে না পারায় হাতিটি খুব দুর্বল হয়ে যায়।

তখন বণ্যপ্রাণি সংরক্ষণ বিভাগ এবং বন বিভাগের ঢাকা ও চট্টগ্রামের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাতিটিকে সাফারি পার্কে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেখান থেকে হাতিটির আর বনে ফেরা হল না।