রৌমারীতে পানিবন্দি ৭০ হাজার মানুষ, অনাহারে-অর্ধারে মানবেতর দিন যাপন
ডেস্ক রিপোর্টার:
টানা আষাড়ি বর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ী ঢলে রৌমারী উপজেলার প্রায় সব নদীর পানি বেড়ে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। প্লাবিত হয়েছে ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৪০ টি গ্রাম। ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যাবস্থা, দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট, অনেক পানি বন্দি মানুষ স্থান নিয়েছে উচু রাস্তায়। বন্ধ হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নষ্ট হয়েছে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির বীজতলা, আষাঢ়ি রোপা আমন, শাক সবজীর ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩ হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি।
প্রায় ৮ দিন ধরে পানি বন্দি মানুষ রান্না-বান্না ছাড়াই না খেয়ে দুর্ভোগ চরমে উঠেছে বানভাসী মানুষজনের। এখন পর্যন্ত বেশীর ভাগ বানভাসী মানুষের মাঝে একমুঠো ত্রাণের চাল বা শুকনো খাবার জোটেনি।
বিশেষ করে ৬ টি ইউনিয়নের ৪ টি ইউনিয়নের মধ্যে বন্দবেড়, চরশৌলমারী, শৌলমারী রৌমারী ও যাদুরচর ইউনিয়নের বানভাসি মানুষ অনাহারে কিংবা অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে অনেক পরিবার, এসব ঘরছাড়া মানুষ গুলোর হাতে প্রায় ১৫ দিন থেকে কাজ না থাকায় খেয়ে না খেয়ে কেউ মাচা পেতে কেউবা আবার ঘরের ধর্নার সাথে, কেউবা রাস্তা, স্কুলে খোলা আকাশের নিচে থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ঘরে খাবার না থাকায় বিশেষ করে বিপদে পড়েছে শ্রমজীবি ও নিম্ন আয়ের মানুষজন। পাশা পাশি গো খাদ্যের সংকট নিয়ে বিপাকে পড়েছে মানুষজন।
বন্যার পানিতে নিমজ্জিত গ্রামগুলি বোয়ালমারী, নতুন শৌলমারী, চরবোয়ালমারী, ওকড়াকান্দা, ডাঙ্গুয়াপাড়া, গুচ্ছ গ্রাম, পশ্চিম বাইটকামারী, বাইশপাড়া, বাগুয়ারচর, ঘুঘুমারী, চরকাজাইকাটা, ইটালুকান্দা, কাউনিয়ারচর, ছাটকড়াইবাড়ী, ধনতলা, চরধনতলা, শান্তিরচর, মিয়ারচর, ফুলবাড়ী, বারবান্দা, চর ইজলামারী, কড়াইকান্দি, ঠনঠনি পাড়া, খেওয়ারচর, বকবান্দা, আলগারচর, লাঠিয়ালডাঙ্গা, যাদুরচর, কান্দাপাড়া, চাক্তাবাড়ী, ছায়দাবাদসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন দুর্গোত এলাকায় হাজার হাজার পানি বন্দি মানুষের মাঝে ত্রানের চলছে হাহাকার।
শৌলমারী ইউনিয়নের হাবিব, রোকেয়া, সাবিনা, রহেজাসহ অন্যান্য ইউনিয়নের বানভাসী মানুষ জানান, আমরা ৫/৭ দিন থেকে পানি বন্দি হয়ে আছি। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন সাহায্য পায়নি।
বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলেন, বানভাসী মানুষের দুর্ভোগের কথা শিকার করে বলেন আমার এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দি। আমাকে সরকারী ভাবে মাত্র শুকনা খাবার ২০০ প্যাকেট দিয়েছে। এ সামান্য শুকনার খাবারের প্যাকেট দিয়ে কিছুই হয়নি।
উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান বলেন, এ পর্যন্ত বানভাসী মানুষের মাঝে সরকারী ভাবে ত্রাণের জন্য মাত্র ২৫০ প্যাকেট শুকনা খাবার পেয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার দ্বীপঙ্কর রায় বলেন, সরকারী ভাবে বানভাসি মানুষের জন্য আমি মাত্র ২৫০ প্যাকেট ১০ প্রকারের বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী মিলে ১ টি করে প্যাকেট। তাহা আজ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্যাহ মিলে বানভাসী মানুষের মাঝে বিতরণ করে আসছি।