শীলার হাতে দেশের পতাকা
ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে সাঁতারের পাট চুকিয়ে দিয়েছেন মাহফুজা খাতুন শীলা। কিন্তু বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) ঠিকই মনে রেখেছে গত এসএ গেমসে দুটি সোনা জেতা এই সাঁতারুকে। নেপালে হতে যাওয়া প্রতিযোগিতাটির এবারের আসরে তার হাতেই দেশের পতাকা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
আগামী ১ ডিসেম্বর নেপালের কাঠমাণ্ডু ও পোখারায় শুরু হবে এসএ গেমসের ত্রয়োদশ আসর। ২৭টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে ২৫টিতে অংশ নিবে বাংলাদেশ। অ্যাথলেট, কোচ, কর্মকর্তা মিলিয়ে ৫৮৯ জনের বহরে সবার সামনে দেশের পতাকা নিয়ে ‘মার্চ পাস্টে’ নেতৃত্ব দিবেন শীলা।
২০১৬ সালের এসএ গেমসে বাংলাদেশের পাওয়া চারটি সোনার দুটি এসেছিল শীলার হাত ধরে। সেবার ৫০ ও ১০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকের সেরা এই সাঁতারুর হাতে দেশের পতাকা দেওয়ার কথা সাংবাদিকদের জানান এসএ গেমসে বাংলাদেশের সেফ দ্য মিশন ও বিওএ যুগ্ম মহাসচিব আসাদুজ্জামান কোহিনুর।
“শীলাকে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে কয়েকটি বিষয় আমাদের দেখতে হয়েছে। প্রথমত ১০০ ও ৫০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে এখন পর্যন্ত সে-ই দক্ষিণ এশিয়ার সেরা। এই গেমসে হয়তো অন্য কেউ তার জায়গায় চলে আসবে। তাছাড়া ও কিন্তু অনেক আগে থেকেই আমাদের কন্টিনজেন্টের একজন অংশ ছিল। ব্যক্তিগত কারণে সরে দাঁড়ালেও আমরা ওকে বেছে নিয়েছি দলের একজন ডেলিগেট হিসেবে।”
সাঁতার ছেড়ে দেওয়ার পর এমন প্রাপ্তিতে যারপরনাই উচ্ছ্বসিত শীলা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন, এমন সম্মান পাওয়ার কথা ঘুনাক্ষরেও ভাবেননি তিনি।
“এই আনন্দ আসলে ভাষায় প্রকাশ করার নয়। একেবারেই অন্যরকম। এসএ গেমসে আমি দেশের পতাকা বয়ে নিব, নেতৃত্ব দিব! সবার আগে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ। তারা আমাকে মনে রেখেছে, আমার কথা ভেবেছে এবং আমাকে এটার যোগ্য মনে করেছে বলে।”
“সেই ২০১৬ সালে সোনা জিতেছি। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে সাঁতার থেকে অবসর নিয়েছি। আমি আসলে ভাবতেও পারিনি আমার শেষটা এভাবে, এত সুন্দরভাবে হবে। এ কারণে আরও বেশি ভালো লাগছে।”
“আগেও আমি ফেডারেশনের অবহেলার কারণে সাঁতার থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। এরপর ফিরেছি। কিন্তু এবার ব্যক্তিগত কারণে অবসর নিয়েছি। পারিবারিক বিষয়, ডাক্তারের পরামর্শের কারণে সাঁতারকে বিদায় বলেছি। তাই এবারের এসএ গেমসে খেলছি না বলে কোনো আক্ষেপ নেই। বরং এই খবর শোনার পর মনে হচ্ছে সর্বোচ্চ সম্মান নিয়ে আমি বিদায় নিচ্ছি। এটা আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”