মঙ্গল. অক্টো. 15th, 2024

সত্যিকারের অভিভাবক হারালাম: প্রধানমন্ত্রী

সেই ৮১ সালে দেশে ফিরে পরিবারের সবাইকে হারানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে পেয়েছিলেন তার ‘অভিভাবক’ হিসেবে। এরপর গত চার দশক ধরে আওয়ামী লীগের এই বর্ষীয়ান নেতা সভাপতিকে ঘিরে থেকেছেন ছায়াসঙ্গী হয়ে।

সংসদ উপনেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “তার মৃত্যুতে জাতির এক অপূরণীয় ক্ষতি হল, আমরা একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকে হারালাম এবং আমি হারালাম একজন সত্যিকারের অভিভাবক।”

৮৭ বছর বয়সী সাজেদা চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। রোববার মধ্যরাতে তার মৃত্যু হয়। ফরিদপুরে নির্বাচনী এলাকা সালথা ও নগরকান্দা এবং ঢাকায় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে বনানী কবরস্থানে।

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়, এক শোকবার্তায় সরকারপ্রধান প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।


শোকবার্তায় শেখ হাসিনা স্মরণ করেছেন, সেই সম্মেলনে তাকে দলের শীর্ষ পর্যায়ে আনতে সাজেদা চৌধুরীর ভূমিকা ছিল ‘অপরিসীম’।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময় থেকেই তার সঙ্গে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর পরিচয় এবং তখন থেকেই তিনি আওয়ামী রাজনীতিতে আকৃষ্ট হন।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে সাজেদা চৌধুরীর সম্পৃক্ততা শুরু হয় ১৯৫৬ সালে। ৬৬ সালের ছয়দফা আন্দোলন এবং ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এছাড়া দেশের স্বাধীনতা আগে ও পরে অন্যান্য সকল আন্দোলন সংগ্রামে তার কৎপর ভূমিকার কথা শোকবার্তায় স্মরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

১৯৬৯ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সাজেদা চৌধুরী। পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর দলের ক্রান্তিকালে সাজেদা চৌধুরী দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন।

তার সেই ভূমিকার কথা স্মরণে শেখ হাসিনা তার শোকবার্তায় বলেন, “ঘাতকেরা জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার পর তিনি জেল-জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। “

১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের পর ১৯৯২ সাল থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীতে ছিলেন সাজেদা চৌধুরী।

শেখ হাসিনা বলেন, “৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরার পর তাকে একজন অভিভাবক হিসেবে পেয়েছিলাম। সেই থেকে অসুস্থ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি সার্বক্ষণিক ছায়াসঙ্গী হিসেবেই ছিলেন।“