বৃহস্পতি. এপ্রিল 25th, 2024

কাউনিয়ায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও ধান চিটা হওয়ায় দুশ্চিন্তায় কৃষক

নিজস্ব প্রতিবেদক কাউনিয়া রংপুর :
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে চলতি মৌসূমে জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। যেদিকে চোখ যায় শুধু ধান আর ধান। শীষ বের হওয়ার সাথে সাথে মনভরে উঠেছে তাদের। কয়েকদিন গেলেই জমির ধান ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখছেন তারা। এদিকে কোনো কোনো খেতের ধানের শিষ একেবারেই মরে গিয়ে চিটা হয়ে হওয়ায় দুঃশ্চিন্তায় ভেঙ্গে পড়েছেন কৃষকরা।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকের ধানী ফসল সোনালি স্বপ্নের ধান পাকতে শুরু করেছে। কোনো কোনো খেতের ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ জাতের ধানের পরিপক্কতা আসার আগেই ধানের শীষ শুকিয়ে সোনালী রং ধারণ করেছে। মনে হয় ধানগুলো পেকেছে। আদৌ তা নয়। ধানের শিষ একেবারেই মরে গিয়ে চিটা হয়ে গেছে।
উপজেলার সদর বালাপাড়া ইউনিয়নের হরিম্বর গ্রামের কৃষক মোজাহার আলী বাংলার চিত্র ডটকমকে জানান, ধার-দেনা করে জমিতে ধান চাষ করেছি। বাম্পার ক্ষেত হয়েছে কিন্তু শেষ সময়ে এসে দেখা যায় ধানের শিষ মরে সাদা হয়ে যাচ্ছে। দুই–তিন রকম ওষুধ দিয়েছেন। তাতেও কোনো কাজ হয়নি। তার সমস্ত ক্ষেতের ধান চিটা হয়ে গেছে। এখন তিনি ঋণ পরিশোধ করবেন কিভাবে তা নিয়ে দুঃশ্চিতায় পরেছি। একই গ্রামের আলম জানান, পাড়ার ময়মুরুব্বি আর কীটনাশক ব্যবসায়ীদের পরামর্শে আক্রান্ত ধানক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়েছে কোন কাজ হয় নাই। এলাকার আবু সুফিয়া মিয়ার ১বিঘা জমিতে ধান চিটা হয়ে গেছে। ওই মাঠের কৃষানী শান্তি রানীসহ অনেক কৃষকের ধান চিটা হয়ে গেছে। অপরদিকে তালুক সাহাবাজ গ্রামের মোক্তার হোসেন জানান, ৬বিঘা জমির মধ্যে ৫বিঘা জমির ধান চিটায় পরিণত হয়েছে। ২/১দিন পর পর বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ক্রয় করতে গিয়ে নাজেহাল হয়ে পড়েছি হাই পাওয়ার কীটনাশক দিয়েও কোন কাজ লাভ হয়নি। গংগানারায়ন গ্রামের কৃষক শামছুল আলম জানান, আক্ষেপ করে জানান, ধানের উপর নিরর্ভর করে সংসার চলে তাই ধার-দেনা করে জমিতে ধান চাষ করেছেন। কিন্তু তাদের ক্ষেতের ধান চিটা হওয়ায় এখন কি ভাবে সংসার চলবে তা নিয়ে দুঃশ্চিতায় পরেছেন তিনি।
লাভের আশায় বাম্পার ফলনে ভরে উঠেছিল কৃষকের বুক। কিন্তু সেই আশায় এখন গুড়ে বালি। সেই আশাবাদী ফসলের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বøাস্ট, পাতা পোড়া ও শীষে এক প্রকার রোগ। যা কৃষককে ভাবিয়ে তুলেছে। কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোন লাভ না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। ফলে ধানের বাম্পার ফলন হলেও চলতি বোরো মৌসূমে ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ব্যহত হবার আশল্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, চলতি বোরো মৌসুমে এবারে লক্ষ মাত্রা ছিল ৭হাজার ৫শ ৫০হেক্টর। উৎপাদন হয়েছে ৭হাজার ৫শ ৭৫হেক্টর। ২৫হেক্টর জমিতে উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে অল্প কিছু ধান ক্ষেতে হঠাৎ করে বাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। বøাস্ট রোগ যেন না হয় সে জন্য কৃষি বিভাগ কৃষকদের সচেতনতা করণসহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আগামিতে প্রনোদনা দেওয়ার আশ্বাসদেন তিনি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।