শুক্র. মার্চ 29th, 2024

ডেঙ্গুতে জাহাঙ্গীরনগর শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রঞ্জিত দাস চৌহান জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়।

রোববার রাত দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ বছর বয়সী এই তরুণের মৃত্যু হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সিনে সোসাইটির সাবেক সহসভাপতি মাজহারুল ইসলাম সৈকত বলেন, “রঞ্জিত গতকাল অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কুমিল্লায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়।”

রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করার পর রঞ্জিতকে আইসিইউতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছিল। কিন্তু তার আগেই তার মৃত্যু হয় বলে জানান মাজহার।

তিনি বলেন, “রঞ্জিত আগে থেকেই অসুস্থ ছিল। কিন্তু বোঝা যায়নি। কাউকে সে কিছু বলেওনি। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা গেছে ওর প্লাটিলেট ৫ হাজারের নিচে নেমে গিয়েছিল।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা। তিনি জানান, দেশে করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর থেকে রঞ্জিত কুমিল্লাতেই ছিলেন। তবে সম্প্রতি তিনি ঢাকা ঘুরে গিয়েছিলেন।

“হয়ত ঢাকায় এসেই এইডিস মশার কামড় খেয়েছে। ঢাকা থেকে ইনফেকশন হয়েছে বলে ধারণা করছি। কারণ কুমিল্লায় এখনও এইডিসের উপস্থিতি আছে বলে জানা নেই।”

গতবছর বাংলাদেশে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু। এ বছর প্রকোপ ততটা না থাকলেও বছরের শেষ সময়ে এসে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছর জানুয়ারি থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৬৭ জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ২১ জন ডেঙ্গু নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৮৪ জন।

এ পর্যন্ত যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের ৭৬২ জনই ঢাকার। বাকি ১০৫ জন দেশের বিভিন্ন জেলার।

আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৬৩ জন অক্টোবরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর নভেম্বরের প্রথম ১৫ দিনেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৪০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমে এ বছর ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৫ জনের মৃত্যুর তথ্য নথিভুক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২ জনের মৃত্যুর কারণ পর্যালোচনা করে ডেঙ্গু নিশ্চিত করেছে আইইডিসিআর।

ডেঙ্গু এখন বাংলাদেশে সারাবছরের রোগে পরিণত হয়েছে বলে মনে করেন প্রাণিবিজ্ঞানের অধ্যাপক কবিরুল বাশার।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমাদের দেশে এইডিস মশা সারা বছরই থাকবে। বিশেষ করে নির্মাণ এলাকা এবং যেখানে পানি সঙ্কট, সেখানে মানুষ পানি জমিয়ে রাখছে, এ কারণে এইডিস মশা বংশ বিস্তার করতে পারছে সহজেই। এজন্য মৌসুম ভিত্তিক কার্যক্রমের বাইরেও সারাবছরই এইডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।”

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।