শুক্র. মার্চ 29th, 2024

দিনাজপুর অঞ্চলে আগাম ধান হিসেবে ব্রি ধান-৯০ চাষের অপার সম্ভাবনা

দিনাজপুর প্রতিনিধি :


বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১৬৬.৫৯ মিলিয়ন; ১.২৬% বৃদ্ধি হারে ২০৩০ সালে যা বেড়ে দাঁড়াবে ১৮৯.৮৮ মিলিয়ন। এই বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার জন্য প্রতিবছর ৩.৩০ লাখ মেট্রিক টন চাল অতিরিক্ত উৎপাদন করতে হবে। অন্যদিকে কৃষি জমির পরিমাণ, জমির উর্বরতা, ভূগর্ভস্থ পানিসহ প্রাকৃতিক সম্পদ এবং কৃষি শ্রমিক ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। এ ছাড়া পরিবর্তিত জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলা করে ধানের ফলন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশে ধানের চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ধান উৎপাদনে সীমিত সম্পদ ব্যবহার করে উচ্চ ফলনশীল আধুনিক জাত ও টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং সম্প্রসারণের মাধ্যমে ফলনবাড়ানোতথাখাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ করা কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর অন্যতম লক্ষ্য। এ প্রেক্ষিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সদর দিনাজপুরের সার্বিক সহযোগীতায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি), আঞ্চলিক কার্যালয় রংপুর গতকাল শনিবার সদর উপজেলার মোহনপুর গ্রামে ব্রি ধান-৯০ ধানের জাতের ফসল কর্তন উৎসবের আয়োজন করে। উক্ত ফসল কর্তন উৎসবে কৃষক ও কৃষির সাথে সম্পর্কিত প্রায় ১০০ জন অংশগ্রহনকারী ছিলেন। উল্লেখ্য, মুজিবজন্ম শতবর্ষ উপলক্ষ্যে মোহনপুর গ্রামে কৃষক মোঃ আব্দুর রশিদ সরকারের এক একর জমিতে ব্রি ধান-৯০ ধানের জাতের ব্লক প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করা হয়। ২০১৯ সালে উদ্ভাবিত ব্রি ধান-৯০ জাতটিতে আধুনিক উফশী ধানের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এ জাতের কান্ড শক্ত, সহজে হেলে পড়েনা এবং ধান পাকার পরও গাছ সবুজ থাকে। এ জাতের ধানের গাছের গড় উচ্চতা ১১০ সেন্টিমিটার এবং ধানের আকৃতি ব্রি ধান-৩৪ এর মতো ছোট দানা বিশিষ্ট। জাতটির ফসল কর্তন করে ১৪% আদ্রতায় বিঘা (৩৩ শতাংশ) প্রতি ১৫ মণ ফলন পাওয়া যায় এবং জীবনকাল ছিল ১১৮ দিন। স্বল্প-জীবনকাল সম্পন্ন জাতটির আশানুরূপ ফলনে উপস্থিত সকলে সন্তোষ প্র্রকাশ করেন এবং কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ কৃষক পর্যায়ে জাতটি ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণের মাধ্যমে দিনাজপুর অঞ্চলে কন্দাল, মসলা (পেয়াজ ও রসুন), তেল ও ডাল জাতীয় ফসলের বৃদ্ধির অপার সম্ভাবনার বিষয়ে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ফসল কর্তন অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন মোঃ মেসবাহুল ইসলাম, সিনিয়র সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়। এ ছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ মোঃ তৌহিদুল ইকবাল, অতিরিক্ত পরিচালক, ডিএই, রংপুর অঞ্চল, রংপুর; কৃষিবিদ মোঃ শাহ আলম, অতিরিক্ত পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত), ডিএই, দিনাজপুর অঞ্চল, দিনাজপুর; কৃষিবিদ প্রদীপ কুমার গুহ, উপ-পরিচালক, ডিএই, দিনাজপুর; ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয় রংপুরের প্রধান ও উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ রকিবুল হাসান; ড. মোঃ মাসুদ রানা, উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ব্রি রংপুর; মোঃ আনিছার রহমান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ব্রি রংপুর এবং দিনাজপুর সদর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ মোঃ রফিকুজ্জামান। আরো উপস্থিত ছিলেন এআইএস, বিএডিসি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চিরিরবন্দর এবং ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয় রংপুরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় কৃষকগণ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিবৃন্দ।