শুক্র. এপ্রিল 19th, 2024

পরনির্ভরতা কাটাতে প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদ করুন: প্রধানমন্ত্রী

কোভিড মহামারীর মধ্যেই ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক সংকটের এ সময়ে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আমদানি ও পরনির্ভরতা কাটাতে নিজ দেশের খাদ্য চাহিদা নিজেদের মেটানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

সেইসঙ্গে বৃক্ষ রোপণসহ সামাজিক বনায়নের চর্চা আরও বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে ‘ছাদ বাগান’ উদ্যোগকেও উৎসাহিত করার কথা বলেন সরকারপ্রধান।

রোববার বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০২২ এবং জাতীয় বৃক্ষ রোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলা ২০২২ এর উদ্বোধনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ওই অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন তিনি।

জমি চাষাবাদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমার অনুরোধ থাকবে এক ইঞ্চি জমি যেন আমাদের অনাবাদী না থাকে। আপনারা জানেন যে করোনাভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতির যথেষ্ট ক্ষতি করেছে। এর ওপর আবার এসেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।”

আমদানি করা খাদ্যপণ্য পরিবহনের ভাড়া অত্যন্ত ‘বেড়েছে’ মন্তব্য করে তিনি জানান, “বিভিন্ন পণ্য পাওয়াটাও কষ্টকর হয়ে গেছে।”

বাংলাদেশ উর্বর জমির কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন এতে পরনির্ভরতা কেটে যাবে।

“যেসব জিনিস আমাদের প্রয়োজন তা আমরাই উৎপাদন করবো। এতে আমাদের প্রকৃতি পরিবেশ যেমন রক্ষা পাবে, পাশাপাশি আমরা পরনির্ভরশীলতাও কাটিয়ে উঠতে পারবো। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের কাজ করতে হবে।”
যার জায়গা আছে, তাকে গাছ লাগনোর পরামর্শও দেন শেখ হাসিনা।

“যার যেখানে যতটুকু জায়গা আছে, নিজের গ্রামে যান অন্তত তিনটা করে গাছ লাগান। গাছ এক সময় বিক্রি করলে আপনি পয়সাও পাবেন। আবার প্রকৃতিও রক্ষা পাবে, ফলগুলো খেতেও পারবেন। সেই কাজটা করবেন সেটাই আমি চাই।”

প্রতিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ‘ন্যাচার বেইড সলুশনের’ উপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তার মতে “পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উন্নয়ন করা না হলে সেটা কখনই টেকসই হয় না।”

“যে কোন প্রতিষ্ঠান বা যাই তৈরি হোক না কেন, আমাদের তো করতেই হবে উন্নয়ন। কিন্তু সেটাতে যেন ন্যাচার বেইজড সলুশন এই নীতিটা মেনে চলা হয়।”

বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার পরিবেশ সংরক্ষণে নজর রাখছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজে সেখানে গাছ কাটতে হলে, পরবর্তীতে সমপরিমাণ গাছ লাগতে হবে।

বন ও কৃষি জমি রক্ষায় সরকারের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “কৃষি জমি… বনায়ন রক্ষা করার জন্য যত্রতত্র যাতে শিল্প কলকারখানা গড়ে না ওঠে সেজন্য আমরা সমগ্র বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি।”

তিনি বলেন “বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা শিল্প এলাকায় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, জলাধার সংরক্ষণ, সেদিকে আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দেই। যা আমাদের প্রকৃতি ও প্রতিবেশ রক্ষায় বিশেষ ভাবে সহায়ক হয়।”

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রান্তে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, উপ মন্ত্রী হাবিবুন নাহার, এ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেন পরিবেশমন্ত্রী।