কাউনিয়ায় মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূনীতির অভিযোগ; শিক্ষার পরিবেশ হুমকির মূখে
কাউনিয়া(রংপুর)প্রতিনিধি,
রংপুরের কাউনিয়ায় সোনাতন দারুচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ আব্দুস ছাত্তার এর বিরুদ্ধে আধিপত্য বিস্তার করে অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষক বরখাস্ত, নিয়োগ বাণিজ্য, প্রতিষ্ঠানের গাছ ও মাটি বিক্রয়সহ নানা অভিযোগ উঠেছে সুপারের বিরুদ্ধে। এতে শিক্ষার পরিবেশ হুমকির মূখে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফেরাতে সংশ্লিষ্টদের দ্রæত হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন অভিভাবকরা।
অভিযোগে জানাযায় প্রতিষ্ঠানের সুপার মোঃ আব্দুস ছাত্তার এর বিভিন্ন অনিয়ম, দৃনীতি, অর্থ আত্বসাৎ এর কারণে ইতি পূর্বে ০৯/১০/২০০৭ইং তারিখে সাময়িক বরখাস্থ হন। ১৫/০৬/২০১২ ইং তারিখে জোর পূর্বক মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি সভা চলাকালীন সময়ে হঠাৎ সুপার ৫০/৬০ জন দলীয় লোকজনসহ অফিস কক্ষে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে সকল সদস্যদের কে জিম্মি করে সুপারের লিখে আনা নতুন রেজুলেশন বহি ও নোটিশ খাতায় স্বাক্ষর নিয়ে স্বপদে বহাল হন। বহাল হয়ে সাবেক ইউ,এন ও স্বাক্ষর ও সিল জাল করে নিজের হাতের লেখা রেজুলেশনের মাধ্যমে ১৯ হাজার ৮ শত ২০ টাকা আত্বসাৎ করে ১২/১২/২০০৭ইং তারিখে সুপারের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এডহক কমিটি কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে তৎকালীন ইউ,এন,ও কে আসামি করে রংপুর জজ আদালতে মামলা করে সুপার। গত ১২/১০/২০১৩ইং তারিখে নিজে মাদ্রাসা মাঠে সাধারণ সভা আহবান করেন, সভায় সার্বিক আলোচনান্তে আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে না পারায় কৌশলে পালিয়ে এসে শিক্ষক ৩জন ও এলাকাবাসি ১জনের নামে মিথ্যা মামলা করেন। শিক্ষাথীদের মাসিক বেতন, বিদ্যুৎ বিল, পরিক্ষার ফি, ফরম ফিলাপ, সেশন ফি, দাখিল পাশের সনদ ও প্রশসাপত্র বিতরণে অর্থ আদায়ের কোন প্রকার রশিদ বহি ব্যবহার করেন না। মাদ্রাসার জমি লিজের টাকাসহ অন্যান্য আয় ব্যাংককে কোন প্রকার অর্থ জমা করে না।
৩টি ইউক্লিপটার গাছ বিক্রয় করেন প্রায় ৮ হাজার টাকা, মাদ্রাসার মাটি বিক্রয়, বাশঝাড় বিক্রয়, গাছ বিক্রয় বাবদ প্রায় ২৮ হাজার টাকাসহ মোট ৩৬ হাজার টাকা মাদ্রাসা ফান্ডে জমা না করে আত্মসাৎ করেন।
কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া দীর্ঘ দিন মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকেন, এক দিনে এসে সব স্বাক্ষর করেন। মুভমেন্ট বহি ব্যবহার করেন না। শিক্ষাথীদের উপবিত্তি বিপরিতে টিউশন ফি অগ্রণী ব্যাংক কেডেট কলেজ শাখা থেকে উত্তোলন করে নিজে আত্বসাৎ করেন। শিক্ষক কর্মচারীদের নিকট থেকে এম,পি,ও সিটে নাম, পদবী ও বিষয় সংশোধনীর জন্য ৯ হাজার ৫ শত টাকা কাজ না করে আত্বসাৎ করেন।
১জন দপ্তরী, ১জন নিরাপত্তা কর্মী ও ১জন আয়ার নিয়োগ বাবদ প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। উক্ত টাকা পরবর্তী কমিটিকে হিসাব দিতে হবে বিধায় কমিটি গঠন না করে এলাকার বৈইরী পরিবেশের কারণে নিয়মিত কমিটি গঠন করা সম্ভব হয় নাই বলে ইউ,এন,ও মহাদয়কে এডহক কমিটি গঠনের আবেদন করেন। এই ভাবেই সুপার প্রায় ১৮মাস থেকে প্রতিষ্ঠান চালিয়ে আসিতেছে। সুপারের শিক্ষাগত সনদের সংঙ্গে যোগদান, নিয়োগ,এমপিও সিট,এনআইডি কার্ডে নামের গড়মিল আছে। মাদ্রাসায় এসে সঠিক ভাবে পাঠ দান কার্যক্রম দেখা শুনা না করে ঘন্টার পর ঘন্টা অফিসে বসে দাবা খেলেন।
শিক্ষকরা জানান, এনটিআরসিএ কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক/শিক্ষিকার নিকট থেকে ২০ হাজার থেকে শুরু করে ৪৫হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়েছেন। পরবর্তীতে এ বিষয়ে অভিযোগ প্রদান করলে শিক্ষকদের নিয়োগের সময় কোন লেনদেন হয় নাই মর্মে জোর পূর্বক প্রত্যয়ন গ্রহণ করেন। ২জন শিক্ষক প্রত্যয় দিতে অস্বীকার করায় তাদের বাড়িতে ডেকে এনে হেনস্থ করেন। সুপার কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূনীতি করে প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকান্ড করেন। সে কারণে প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফেরাতে অযোগ্য সুপারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূনীতি বিষয়ে লিখিত ভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে অভিযোগ করেছি।
মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আব্দুস ছাত্তার বলেন আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ভূয়া মিথ্যা ও বানোয়াট। গাছ বিক্রি, জমির মাটি বিক্রি, এনটিআরসিএ কর্তৃক নির্বাচিত শিক্ষকের নিকট থেকে উৎকোচ গ্রহনের বিষয় গুলো সঠিক নয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মহিদুল হক বলেন মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে ৩ সদস্য তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে।
সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকাবাসী। এ অবস্থায় উভয় পক্ষের মধ্যে যে কোন মূহুর্তে ঘটে যেতে পারে রক্তক্ষয়ী সংর্ঘের মত ঘটনা বলে আশংকা করছেন স্থানীয় অনেকেই।